যেকোনো কাজে কল্যাণ লাভ করার জন্য ‘ইস্তিখারা’ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমল। আজ আমরা ইস্তিখারা সম্পর্কে আলোচনা করবো।
❑ ইস্তিখারা কী?
.
আরবি ‘ইস্তিখারা’ শব্দের অর্থ হলো, কল্যাণ কামনা করা, ভালো কিছু চাওয়া।
.
ইস্তিখারা হলো, কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করলে, কাজটি করার পূর্বে আল্লাহর কাছে এর কল্যাণ চাওয়া এবং কাজটিতে কোনো অকল্যাণ থাকলে আল্লাহ্ যেন দূর করে দেন এবং সঠিক পথনির্দেশ দেন, সেটি কামনা করা।
.
❑ ইস্তিখারার পদ্ধতি কী?
.
হাদিসে বর্ণিত নিয়ম অনুসারে, কোনো কাজের ইচ্ছা করলে, প্রথমে অজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়া। এরপর হাদিসে বর্ণিত বিশেষ দু‘আ পড়া। এরপর মন যেটির দিকে সায় দেবে, সেটিতেই কল্যাণ আছে ধরে কাজ শুরু করে দেওয়া। [সহিহ বুখারি: ১১৬৬, তিরমিযি: ৪৮০]
.
❑ ইস্তিখারা কখন করতে হয়?
.
১। যখন কেউ কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে চায়, তখন ইস্তিখারা করার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে কল্যাণ কামনা করা। যেমন: কোনো কষ্টকর চ্যালেঞ্জিং সফরে বের হওয়ার আগে ইস্তিখারা করা। ইস্তিখারার পর যদি মন সায় দেয়, তবে বের হবে, অন্যথা অন্য চিন্তা করবে বা অন্যদিন বের হবে।
.
২। যখন দুটো বৈধ কাজের মধ্যে কোনো একটিকে বেছে নিতে হয়, তখন ইস্তিখারার মাধ্যমে তুলনামূলক ভালো (better) কাজটি নির্বাচন করার জন্য আল্লাহর তাওফিক চাওয়া। বিশেষত, যে কাজটিতে অধিক কল্যাণ রয়েছে, সেটি কামনা করা। যেমন: একই সাথে দুটো চাকরি হলো বা দুটো প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ এলো কিংবা বিয়ের দুটো প্রস্তাব এলো। এমতাবস্থায় একটিকে বেছে নিতে হবে। তখন ইস্তিখারা করার পর মন যেটির দিকে সায় দেবে, সেটি বেছে নেওয়া।
.
❑ ইস্তিখারার গুরুত্ব ও উপকারিতা:
.
জাবির ইবনু আবদিল্লাহ (রা.) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে প্রতিটি বিষয়ে (সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে) ইস্তিখারা করতে শেখাতেন, যেভাবে তিনি আমাদেরকে কুরআনের সূরা শেখাতেন।’ [সহিহ বুখারি: ১১৬৬]
.
ইস্তিখারা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। ইস্তিখারা করে কোনো কাজ করলে, সেই কাজে গতি পাওয়া যায় এবং এতে আল্লাহর সাহায্য থাকে। ইস্তিখারা করার মাধ্যমে হীনম্মন্যতা দূর হয়, মানসিকভাবে সুদৃঢ় থাকা যায়।
.
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ্ (রাহিমাহুল্লাহ্ ) বলেন, ‘সে ব্যক্তি অনুতপ্ত হবে না, যে স্রষ্টার নিকট ইস্তিখারা করে ও মানুষের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয় এবং তার উপর অটল থাকে।’
যেকোনো বৈধ কাজে (হোক সেটি দ্বীনি অথবা দুনিয়াবি) সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে এবং কাজটিতে সফলতা ও কল্যাণ লাভ করতে তিনটি কাজ করুন। (শেষে ইস্তিখারার পদ্ধতি ও বিশেষ দু‘আটি আলাদা আলাদা বাক্যে উচ্চারণ ও অর্থসহ আলোচনা করা হয়েছে)
.
(১) প্রথমে নিজের বিবেক-বুদ্ধিকে ব্যবহার করে সেই কাজ ও সিদ্ধান্তের ভালো-মন্দ, কল্যাণ-অকল্যাণ, উপকারী-অনুপকারী ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ভাবুন।
.
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমার জন্য যা কল্যাণকর, তা অর্জনের জন্য তুমি প্রলুব্ধ হও আর আল্লাহর নিকট সাহায্য চাও। কখনই হতাশ হবে না।’’ [সহিহ মুসলিম: ২৬৬৪]
.
(২) এরপর দুই রাকাত নামাজ পড়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শেখানো দু‘আর মাধ্যমে ইস্তিখারা করুন ও আল্লাহর কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করুন। [সহিহ বুখারি: ১১৬৪, তিরমিযি: ৪৮০]
.
(৩) একই সাথে আপনার আপনজন, শুভাকাঙ্ক্ষী, অভিজ্ঞ ও নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের সাথে বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করুন।
.
আল্লাহ্ বলেন, ‘‘তুমি তাদের সাথে পরামর্শ করো।’’ [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৫৯]
.
❑ ইস্তিখারার পদ্ধতি:
.
প্রথমে অজু করে সাধারণ নফল নামাজের মতো দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে হয়। বিশেষ কোনো নিয়ম নেই। এরপর দু‘আ করতে হয়। দু‘আর মধ্যে হাদিসে বর্ণিত দু‘আটি অর্থের দিকে খেয়াল রেখে পাঠ করতে হয় এবং কল্যাণ লাভের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে হয়।
.
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখনই কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার ইচ্ছা করবে, প্রথমে দুই রাকাত নামাজ পড়বে। এরপর বলবে—
.
اَللّٰهُمّ إِنِّيْ أَسْتَخِيْرُكَ بِعِلْمِكَ
আল্লাহুম্মা ইন্নী আসতাখীরুকা বি‘ইলমিকা
[হে আল্লাহ! আমি আপনার ইলমের উসিলায় আপনার কাছে (আমার উদ্দিষ্ট বিষয়ের) কল্যাণ চাই]
.
وَأَسْتَقْدِرُك َ بِقُدْرَتِكَ
ওয়া আসতাক্বদিরুকা বিক্বুদরাতিকা
[আপনার কুদরতের উসিলায় আপনার কাছে (কল্যাণ অর্জনের) শক্তি চাই]
.
وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيْمِ
ওয়া আসআলুকা মিন ফাদ্বলিকাল ‘আযীম
[আর আপনার কাছে আপনার মহান অনুগ্রহের কিছুটা আমি চাই]
.
فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ
ফাইন্নাকা তাক্বদিরু, ওয়া লা আক্বদির
[কেননা, (সকল বিষয়ে) আপনার ক্ষমতা রয়েছে; আমার কোনো ক্ষমতা নেই]
.
وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ
ওয়া তা‘অ্লামু, ওয়া লা আ‘অলাম
[আপনি (সবকিছু) জানেন, আমি কিছুই জানি না]
.
وَأَنْتَ عَلَّامُ الغُيُوْبِ
ওয়া আনতা ‘আল্লামুল গুয়ূব
[আপনি অদৃশ্যের সকল বিষয়ে সর্বজান্তা]
.
اَللّٰهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ
আল্লাহুম্মা ইন কুনতা তা‘অ্লামু
[হে আল্লাহ! আপনি যদি জানেন]
.
أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِيْ
আন্না ★হাযাল আমরা★ খাইরাল লী
[★এই কাজটি★ আমার জন্য কল্যাণকর]
.
فِيْ دِيْنِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ
ফী দী-নী, ওয়া মা‘আ-শী, ওয়া ‘আ-ক্বিবাতি আমরী
[আমার দ্বীন, আমার জীবন-জীবিকা ও কাজের পরিণামের বিচারে]
.
فَاقْدُرْهُ لِيْ وَيَسِّرْهُ لِيْ
ফাক্বদুরহু লী, ওয়া ইয়াসসিরহু লী
[তাহলে আমার জন্য তা নির্ধারণ করে দিন এবং বিষয়টিকে আমার জন্য সহজ করে দিন]
.
ثُمَّ بَارِكْ لِيْ فِيْهِ
সুম্মা বা-রিক লী ফীহি
[অতঃপর এতে আমার জন্য বরকত দান করুন]
.
وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ
ওয়া ইন কুনতা তা‘অ্লামু
[আর, যদি আপনি জানেন]
.
أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِيْ
আন্না ★হাযাল আমরা★ শাররুল লী
[★এই কাজটি★ আমার জন্য অকল্যাণকর]
.
فِيْ دِيْنِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ
ফী দী-নী, ওয়া মা‘আ-শী, ওয়া ‘আ-ক্বিবাতি আমরী
[আমার দ্বীন, আমার জীবন-জীবিকা ও কাজের পরিণামের বিচারে]
.
فَاصْرِفْهُ عَنِّيْ وَاصْرِفْنِيْ عَنْهُ
ফাসরিফহু ‘আন্নী, ওয়াসরিফনী ‘আনহু
[আপনি তা আমার থেকে সরিয়ে দিন এবং আমাকে তা থেকে ফিরিয়ে রাখুন]
.
وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ
ওয়াক্বদুর লিয়াল খাইরা ‘হাইসু কা-না
[আর আমার জন্য কল্যাণের ফায়সালা করুন; তা যেখানেই হোক]
.
ثُمَّ أَرْضِنِيْ بِه
সুম্মা আরদ্বিনী বিহি
[অতঃপর তাতেই আমাকে সন্তুষ্ট রাখুন]
.
তিনি বলেন, দু‘আটির যে দুই জায়গায় هَذَا الأَمْرَ (হাযাল আমর বা ‘‘এই কাজটি’’) বলা আছে, সেখানে নিজ প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করবে। (কিংবা অন্তত মনে মনে সেটি কল্পনা করবে।) [সহিহ বুখারি: ১১৬৬, ৬৩৮২, ৭৩৯০; তিরমিযি: ৪৮০; আবু দাউদ: ১৫৩৮]
.
দু‘আ শেষ করার পর মন যেদিকে সায় দেবে এবং যেভাবে কাজটি করা কল্যাণকর মনে হবে, সেটিকে সঠিক ভেবে কাজ শুরু করবেন। ধরুন, আপনার কোথাও যাওয়া দরকার আবার বাসার মধ্যেও থাকা দরকার। এমতাবস্থায় সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। তখন ইস্তিখারা করবেন। ইস্তিখারার পর যদি মনে হয়, বাসায় থাকাটাই আপনার জন্য অধিক কল্যাণকর হবে, তাহলে আপনি সেটিই করবেন এবং ভেবে নিবেন, এই সিদ্ধান্তটি আল্লাহর পক্ষ থেকেই এসেছে আর এতেই আপনার কল্যাণ রয়েছে।
.
ইস্তিখারা করার সাথে সাথেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে হবে, বিষয়টি এমন নয়। এক বেলা বা কয়েক ঘণ্টা, এমনকি কয়েক দিনও অপেক্ষা করতে পারেন। তবুও সিদ্ধান্ত নিতে কষ্ট হলে প্রয়োজনে একাধিকবার ইস্তিখারা করাও জায়েয। এরপর মন যেটাতে ঝুঁকবে, সেটাতেই কল্যাণ আছে ভেবে নেবেন। এর সাথে সাথে নিজের বিবেক-বুদ্ধির সাহায্য নেবেন এবং নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের সাথেও পরামর্শ করবেন।
.
ইনশাআল্লাহ্, পরবর্তী পর্বে আলোচনা করবো ইস্তিখারা করার বিকল্প পদ্ধতি, কিছু ছোটো দু‘আ ও ইস্তিখারার বিষয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু পয়েন্ট নিয়ে।
.যেকোনো বৈধ কাজে (হোক সেটি দ্বীনি অথবা দুনিয়াবি) সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে এবং কাজটিতে সফলতা ও কল্যাণ লাভ করতে তিনটি কাজ করুন। (শেষে ইস্তিখারার পদ্ধতি ও বিশেষ দু‘আটি আলাদা আলাদা বাক্যে উচ্চারণ ও অর্থসহ আলোচনা করা হয়েছে)
.
(১) প্রথমে নিজের বিবেক-বুদ্ধিকে ব্যবহার করে সেই কাজ ও সিদ্ধান্তের ভালো-মন্দ, কল্যাণ-অকল্যাণ, উপকারী-অনুপকারী ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ভাবুন।
.
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমার জন্য যা কল্যাণকর, তা অর্জনের জন্য তুমি প্রলুব্ধ হও আর আল্লাহর নিকট সাহায্য চাও। কখনই হতাশ হবে না।’’ [সহিহ মুসলিম: ২৬৬৪]
.
(২) এরপর দুই রাকাত নামাজ পড়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শেখানো দু‘আর মাধ্যমে ইস্তিখারা করুন ও আল্লাহর কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করুন। [সহিহ বুখারি: ১১৬৪, তিরমিযি: ৪৮০]
.
(৩) একই সাথে আপনার আপনজন, শুভাকাঙ্ক্ষী, অভিজ্ঞ ও নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের সাথে বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করুন।
.
আল্লাহ্ বলেন, ‘‘তুমি তাদের সাথে পরামর্শ করো।’’ [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৫৯]
.
❑ ইস্তিখারার পদ্ধতি:
.
প্রথমে অজু করে সাধারণ নফল নামাজের মতো দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে হয়। বিশেষ কোনো নিয়ম নেই। এরপর দু‘আ করতে হয়। দু‘আর মধ্যে হাদিসে বর্ণিত দু‘আটি অর্থের দিকে খেয়াল রেখে পাঠ করতে হয় এবং কল্যাণ লাভের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে হয়।
.
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখনই কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার ইচ্ছা করবে, প্রথমে দুই রাকাত নামাজ পড়বে। এরপর বলবে—
.
اَللّٰهُمّ إِنِّيْ أَسْتَخِيْرُكَ بِعِلْمِكَ
আল্লাহুম্মা ইন্নী আসতাখীরুকা বি‘ইলমিকা
[হে আল্লাহ! আমি আপনার ইলমের উসিলায় আপনার কাছে (আমার উদ্দিষ্ট বিষয়ের) কল্যাণ চাই]
.
وَأَسْتَقْدِرُك َ بِقُدْرَتِكَ
ওয়া আসতাক্বদিরুকা বিক্বুদরাতিকা
[আপনার কুদরতের উসিলায় আপনার কাছে (কল্যাণ অর্জনের) শক্তি চাই]
.
وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيْمِ
ওয়া আসআলুকা মিন ফাদ্বলিকাল ‘আযীম
[আর আপনার কাছে আপনার মহান অনুগ্রহের কিছুটা আমি চাই]
.
فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ
ফাইন্নাকা তাক্বদিরু, ওয়া লা আক্বদির
[কেননা, (সকল বিষয়ে) আপনার ক্ষমতা রয়েছে; আমার কোনো ক্ষমতা নেই]
.
وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ
ওয়া তা‘অ্লামু, ওয়া লা আ‘অলাম
[আপনি (সবকিছু) জানেন, আমি কিছুই জানি না]
.
وَأَنْتَ عَلَّامُ الغُيُوْبِ
ওয়া আনতা ‘আল্লামুল গুয়ূব
[আপনি অদৃশ্যের সকল বিষয়ে সর্বজান্তা]
.
اَللّٰهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ
আল্লাহুম্মা ইন কুনতা তা‘অ্লামু
[হে আল্লাহ! আপনি যদি জানেন]
.
أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِيْ
আন্না ★হাযাল আমরা★ খাইরাল লী
[★এই কাজটি★ আমার জন্য কল্যাণকর]
.
فِيْ دِيْنِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ
ফী দী-নী, ওয়া মা‘আ-শী, ওয়া ‘আ-ক্বিবাতি আমরী
[আমার দ্বীন, আমার জীবন-জীবিকা ও কাজের পরিণামের বিচারে]
.
فَاقْدُرْهُ لِيْ وَيَسِّرْهُ لِيْ
ফাক্বদুরহু লী, ওয়া ইয়াসসিরহু লী
[তাহলে আমার জন্য তা নির্ধারণ করে দিন এবং বিষয়টিকে আমার জন্য সহজ করে দিন]
.
ثُمَّ بَارِكْ لِيْ فِيْهِ
সুম্মা বা-রিক লী ফীহি
[অতঃপর এতে আমার জন্য বরকত দান করুন]
.
وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ
ওয়া ইন কুনতা তা‘অ্লামু
[আর, যদি আপনি জানেন]
.
أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِيْ
আন্না ★হাযাল আমরা★ শাররুল লী
[★এই কাজটি★ আমার জন্য অকল্যাণকর]
.
فِيْ دِيْنِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ
ফী দী-নী, ওয়া মা‘আ-শী, ওয়া ‘আ-ক্বিবাতি আমরী
[আমার দ্বীন, আমার জীবন-জীবিকা ও কাজের পরিণামের বিচারে]
.
فَاصْرِفْهُ عَنِّيْ وَاصْرِفْنِيْ عَنْهُ
ফাসরিফহু ‘আন্নী, ওয়াসরিফনী ‘আনহু
[আপনি তা আমার থেকে সরিয়ে দিন এবং আমাকে তা থেকে ফিরিয়ে রাখুন]
.
وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ
ওয়াক্বদুর লিয়াল খাইরা ‘হাইসু কা-না
[আর আমার জন্য কল্যাণের ফায়সালা করুন; তা যেখানেই হোক]
.
ثُمَّ أَرْضِنِيْ بِه
সুম্মা আরদ্বিনী বিহি
[অতঃপর তাতেই আমাকে সন্তুষ্ট রাখুন]
.
তিনি বলেন, দু‘আটির যে দুই জায়গায় هَذَا الأَمْرَ (হাযাল আমর বা ‘‘এই কাজটি’’) বলা আছে, সেখানে নিজ প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করবে। (কিংবা অন্তত মনে মনে সেটি কল্পনা করবে।) [সহিহ বুখারি: ১১৬৬, ৬৩৮২, ৭৩৯০; তিরমিযি: ৪৮০; আবু দাউদ: ১৫৩৮]
.
দু‘আ শেষ করার পর মন যেদিকে সায় দেবে এবং যেভাবে কাজটি করা কল্যাণকর মনে হবে, সেটিকে সঠিক ভেবে কাজ শুরু করবেন। ধরুন, আপনার কোথাও যাওয়া দরকার আবার বাসার মধ্যেও থাকা দরকার। এমতাবস্থায় সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। তখন ইস্তিখারা করবেন। ইস্তিখারার পর যদি মনে হয়, বাসায় থাকাটাই আপনার জন্য অধিক কল্যাণকর হবে, তাহলে আপনি সেটিই করবেন এবং ভেবে নিবেন, এই সিদ্ধান্তটি আল্লাহর পক্ষ থেকেই এসেছে আর এতেই আপনার কল্যাণ রয়েছে।
.
ইস্তিখারা করার সাথে সাথেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে হবে, বিষয়টি এমন নয়। এক বেলা বা কয়েক ঘণ্টা, এমনকি কয়েক দিনও অপেক্ষা করতে পারেন। তবুও সিদ্ধান্ত নিতে কষ্ট হলে প্রয়োজনে একাধিকবার ইস্তিখারা করাও জায়েয। এরপর মন যেটাতে ঝুঁকবে, সেটাতেই কল্যাণ আছে ভেবে নেবেন। এর সাথে সাথে নিজের বিবেক-বুদ্ধির সাহায্য নেবেন এবং নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের সাথেও পরামর্শ করবেন।
.
ইনশাআল্লাহ্, পরবর্তী পর্বে আলোচনা করবো ইস্তিখারা করার বিকল্প পদ্ধতি, কিছু ছোটো দু‘আ ও ইস্তিখারার বিষয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু পয়েন্ট নিয়ে।
২টি পর্ব একসাথে
0 Comments